Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

শুভদীপ নায়কের দীর্ঘকবিতা

জীবনের শেষ রোদ

মরা প্রজাপতিরাশি
আমি তাই নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি
পাহাড়ে, পাতা ঝরা পথ আর বনান্তের
সমস্ত আড়াল আমার সাক্ষী
নিজেকে ফুটিয়ে তোলা ছাড়া
সেগুনকাঠের আর কোনও যত্ন নেই
বৃক্ষস্বাধীনতা নিয়ে সূর্যের আলো এসে পড়েছে
পাহাড়ের ক্ষুধার্ত শৃঙ্গে, বরফের স্রোত
ডিঙিয়ে বসে আছে পূর্ণযুবতীরা, বিবর্ণ সারসের মত তাদের স্বচ্ছদৃষ্টি।
এইভাবে একদিন সব উপহার শেষ হয়ে যাবে
খণ্ড মেঘ এসে একদিন নিয়ে যাবে জলপাইবনে, কুরুশকাঁটার জঙ্গলে
কোথায় গড়িয়ে পড়েছে জল? কোন চোখে মানুষ তাকিয়ে থাকে শতপ্রশ্নে?
এল বাঁক, এল হরিণের দল
জুঁই ফুল ঝরে গেল প্রেমিকার বুকের ওপরে,
খসে গেছে বনেদিয়ানার চিহ্ন, আকশি-সংকেত
সাবানগুঁড়োর মত অর্ধসত্য ঘুম চিরদিন মিশে গেছে স্বপ্নে
এত পথ পার হয়ে এসে কুটির নিয়েছি সবেদার বনে, মাটির সরায় রাখা
তরল বিষে পিঁপড়ের মত জমা হয়েছি বৈচিত্র্যদোষে,
প্রজন্ম শিকড় ছড়ায়,
জীবনের তলদেশে, করুণাবৃত্তি ও নিরালার গান নিয়ে।

চারপাশে পরশ্রীকাতর বেলুন উড়ছে,
তাকে কি খুব অস্পট দেখতে পাচ্ছি?
আজ ফুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলাম
কাল ভুলতে বসব গাছের সমস্ত ফল-কে
‘এই বেমানান অসভ্যতা কেন? আমার জন্যে?’
হ্যাঁ, ছোটগল্প আর কবিতা লিখে বন্ধুতা নেমে এল
স্পর্শে, কাহিনি এল চিত্রনাট্যে,
শাকসবজি আর পুকুরে নরম মাছের ভালবাসাবাসি হল,
যুবতী আঁধারমথ,— আমাকে বোলো না
তার হাত ধরে টেনে এনে এ অরণ্য সাজাতে।

এ খাতায় যে বাতাসটুকু বইছে, তার নেশা এতই প্রবল,
তার সংকট এতই ঋণগ্রস্ত, অবিনাশী চোখ আর সহস্র স্থাপত্যে
এতই তার বিপুল ভাঙাভাঙি,
জন্মমাত্র হ্রদের গভীরে নেমে আমি তাকে চিনতে পারিনি,
ভেবেছি সুতো পরানোর মত সে এক সামান্য সূচের ব্যাপার।
মলাট দেওয়ার আগে মার্জিন টানিনি,
কাগজের মোড়কে, মহাবিষুবের ক্ষতে
জীবন কি হারিয়ে গেছে কোলনস্পর্শী চিঠিতে? জবাব পাইনি।
শুধু আশ্চর্য জলের ফোয়ারার নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল উড়ন্ত বনপাখি।

বাগানবাড়িতে গিয়েছি, দেখি সোফার ওপরে বসে হলুদ সিফন শাড়িতে
পত্রিকার পাতা উল্টে দেখছে, আজ ত্রিশ বছর হল, নোনাজল পার করে,
শরীরমনের জাল ছিঁড়ে, স্বপ্ন দেখার অলিগলি ঘুরে, নতুন চিঠির ভাঁজ খুলে,
পরকলা মেঘের মত সিকিভাগ অহংকার সাজিয়ে নিয়ে বসে আছে।
একদিন নতুন চাকরির খবর, অচেনা গাছ, পাহাড়ি পথ আর ছুটন্ত খুরের আঘাত
সবকিছু ভাগ করে নিয়েছি, তাকে ঘিরে স্ত্রীর সব অপমান গোপনে নিয়েছি মেনে।
সেই বিমূর্ত অপেক্ষারত লোভাতুর শরীরটির কাছে, যাকে দুহাতে জড়িয়ে ব্যথা দিয়েছি,
সুর তুলেছি, অন্ন চেয়েছি, বস্ত্র ঘেঁটেছি, মাছের আড়ত ভেবে আঁশ খুঁজে
অনায়াসে তাড়না পেয়েছি, আজ এই ঠান্ডা রোদের দিনে দরজায় পুরুষের ছায়া পড়তেই
উঠে এসে নীরবে দাঁড়ায়, ‘কতদিন পর এলে, চিঠিতে আসার কথা না লিখেই,
অকস্মাৎ এমনভাবে দরজায় কড়া নাড়লে, মনে হয় পুরনো বাতাস বুঝি ফিরে এল জীবনে,
শঙ্কায় বেজে উঠি, কাঁটাবনে বিঁধে যাই নীরবে।’

কোমর জাপটে ধরি, চোখ দুটো ভরে ওঠে লাজে। হাতাকাটা কালো ব্লাউজের
শাসন এড়িয়ে ক্ষীণ হাতদুটি আমাকে জড়িয়ে ধরে নিবারণ পেতে চায়।
আঙুলের সরু ডগা বোতাম খুলতে থাকে জামার কলারে, জলাভূমি ছেড়ে,
কোঠর ফেলে, কয়েক’শ প্রজাতির পাখি অন্যত্র উড়ে যায়।
যা কিছু বৃষ্টিভেজা, স্বপ্নভেজা, রোদের আঘাতে যা কিছু ক্ষতবিক্ষতময়,
সেইসব অবক্ষয়ী পরাধীন ঘাস গজিয়ে উঠল আমাদের উঠানে, দালানের
একপ্রান্তে পাতা হল চায়ের টেবিল, খবরের কাগজ ভারি বইয়ের চাপে
নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছে, চায়ের পেয়ালা আজ ভরে এল, সুধা আর ক্ষুধা
এক হয়ে গেছে। স্নানের অনেক পরে খালি গলায় আর ভিজে চুলে
বেতের মোড়ায় বসে দূরগামী পথটির দিকে আয়নার মত তাকিয়ে।
জিগ্যেস করলাম, ‘কী দেখছ?’

দুঃসাহসে কিনে ফেলি বর্ষার ভাঙামেঘ,
ছত্রছায়া, এবং কবিতার বইগুলো।
বাতাস রয়েছে, তবু—
শূন্য পাকদণ্ডী ও আলের ওপর দিয়ে ভেসে যায় নিরালোক কথা।
এই গ্রাম,
এই গ্রাম তপতীর ছিল,
সমস্ত জীবনভর যে আমাকে বোঝাতে চেয়েছে,
‘এইবার অন্তত আমাদের কথা ভেবে ফিরে আসো, কতকাল
পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াবে! তুমি তো কিছুই করোনি।’

ছায়াসুদ্ধু গাছ কিনে ফেলি,
অন্ধকার পুকুর, পানার আড়াল থেকে একবৃত্ত ঠান্ডা জল,
সবই কিনেছি।
যদুদের বাড়ির ছোট বউ, গলিত লোহার শরীর নিয়ে
ডুব দিয়ে ওঠে।
ভিজে শাড়ি, সিঁদুরের রঙটুকু কপালে মিশেছে,
মেঠোপথ কিনেছি আজ বহুদিন হল, সেই পথে ফেরার মুখে
একদিন তাকেও দেখেছি যুবাপুরুষের ঠোঁটে তৃষ্ণা ছড়াতে।

এই চিঠিপত্র আর দলিল রাখার সিন্দুকটা কিনেছিল ঠাকুর্দা। সেটার শরীর এখন জং লেগে পুড়ে গেছে। স্মৃতিগুলো কিছুকাল ভাল লেগেছিল সুলেখার, বিয়ের পরের কিছু যৎসামান্য দিন এ ঘরে সে ফিরে ফিরে আসত। মায়ের শাড়ি আর গয়না কখনও সে বের করে দেখেনি, সেসব সবই ছিল এই সিন্দুকে। ছিল দুধের সন্তানকে লিখে দিয়ে যাওয়া পৈত্রিক সম্পত্তির হিসেব। মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ের খরচ, মাসে মাসে চারঘাটের বাগানবাড়িতে বেনামে মাসোহারা পাঠানোর কথাও লেখা ছিল। বংশের এসব কাহিনি শুনে সুলেখা বলেছিল, ‘আলাদা ঘর ভাড়া নিলে হয় না? বহুদিন শরিকেরা অপমান করে, ভাইয়েরা বাড়ির ভাগ নিতে চায়, ভাই-বউ ছোটবড় কথা শোনায়। তুমি কি এভাবে রাখবে বলে আমায় এনেছিলে?’ গত বুধবার, সিন্দুক খুলেছি। নিশ্চেতনা ঘিরে ছিল আমাকে। মায়ের শাড়ির নিচে লুকানো পিস্তলটি তুলে নিয়ে দেখি বারুদের গন্ধ আজ আর নেই। বাবা আত্মহত্যা করেছিল এটা দিয়েই। সেইমত আছে ভয়, মেঘের সারল্য খেলা করে মেয়েদের সমস্ত কিনারায়। হরীতকী ফল, সরখেল-বাটি, কাঁসার বাসনপত্র, সবই তো পড়ে আছে সিন্দুকে, শুধু প্রজন্ম পেরিয়ে গেছে। যারা এতকাল ভালবাসত পরস্পরকে, তাদের সন্তান এসেছে। দুধ ও কাপড়চোপড়ে বড় হয়ে তারাও মিশেছে নারী-পুরুষের সঙ্গে। আছে নাম, আছে গোত্র, আছে সম্বন্ধ লেখার ফিতে বাঁধা খাতা। কিন্তু পৃষ্ঠায় নেই শোক, জ্বলছে বিরাট নক্ষত্র, জড়িয়ে ধরার পরে দাবি মেটানোর সুখ, লোভের পাওনাটুকু আছে, পুকুর কেনার খতিয়ান, আছে মামলার কাগজপত্র, জন্ম-মৃত্যুর অসংখ্য বিভাজন, অস্তিত্বের বহু ফাঁক, আছে ভাসুর ও ভাই-বউয়ের মেলামেশার চালচিত্র।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
মলয় রায়চৌধুরী
মলয় রায়চৌধুরী
3 years ago

চমৎকার লিখেছো । পড়তে পড়তে ছবিভাবনার সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারলুম ।

Recent Posts

রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সোমেন চন্দ: এক বহ্নিময় কথাকার

মাত্র সতের বছর বয়সে তিনি একটি উপন্যাস রচনায় হাত দিয়েছিলেন, যদিও তা অসমাপ্ত থাকে। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘বন্যা’। পরবর্তীকালে উপন্যাসটি অসমাপ্ত-ই থেকে যায়। আরও দুঃখের বিষয়, এর বৃহদংশ হারিয়েও গেছে। আজ যে সোমেন চন্দের লেখককৃতির জন্য আমরা তাঁকে স্মরণ করি, তা হল তাঁর বেশ কিছু অসামান্য ছোটগল্প। সংখ্যায় খুব বেশি নয়, মাত্র চব্বিশটি। আরও কিছু গল্প লিখলেও তা কালের ধুলোয় হারিয়ে গেছে। গল্পের সংখ্যা সামান্য, তবে অসামান্যতা রয়েছে সেগুলির রচনার পারিপাট্যে, বিষয়বস্তু চয়নে, শিল্পিত প্রকাশে ও লেখনীর মুনশিয়ানায়। এছাড়া তিনি দুটি নাটিকাও লেখেন, ‘বিপ্লব’ ও ‘প্রস্তাবনা’। লেখেন কিছু প্রবন্ধ। তাঁর ছোটগল্পগুলি এতটাই শিল্পোত্তীর্ণ ছিল যে, তাঁর জীবিতকালেই একাধিক ভাষায় তা অনূদিত হয়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »