Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

মৈনাক দাসের কয়েকটি কবিতা

ইতিহাসের ইস্তেহার

কনকনে বিষন্ন-সিরিঞ্জ দেখে
            ফুলের মাংস মিনমিনে।

মুগ্ধতার গাছে ফুটেছে বিপদফুল

জোনাকির তারুণ্য আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে

গা থেকে সরে যাচ্ছে বর্ণের পরিচয়

পাখি ওড়ার বদলে অভিমান-লাইন ধরে
এসে থেমেছে উপগ্রহের মেট্রোরেল;

কান্নার ঝাঁঝ শুনে মশলার থার্মোমিটারে বেড়েছে পারদ!

বিনোদনের ঠোঙায় ভর্তি নীল লজেন্স

এখন স্মৃতিহীনা অন্ধ অপেক্ষা করছে চুমুর
                            মাংসাশী ফুলের নয়—
.                                          নিকোটিনের।

ত্রুটি

তোমাকে ‘শেষ মানুষ’ বানাব বলে
          নতুন কিছু শিলান্যাস করেছি, ভেঙে ফেলছি
স্তম্ভ, উড়িয়ে দিয়েছি সিলেবাস…

তুমি নিজেকেই বোঝো না!

ধারক-বাহক অথরিটি সেজে
       ফেলছ পা, নিচ্ছ শ্বাস।

রক্তের প্রাপ্তি

আমার জন্মটা কর্দমাক্ত

কেউ তুলে নিয়ে এসে মানুষ করবার
অছিলায় দুমড়েমুচড়ে ভেঙে দিয়েছে নিজস্বতা।

এখনো রক্তঋণ আছে কাদায় আলতারূপে…

কুয়াশায় বসে আবছা গাছের আড়ালে খুঁজি মর্ম।

খোঁচা দিয়ে যায় দু’বেলা অন্নের অগোচরে…

জানা নেই, কবে খুঁজে পাব
রক্তের প্রাপ্তি!

মরীচিকা

তুমি আসবে আসবে করে প্রায় তিরিশ
হাজার বছর বৃন্দাবনী গেয়ে যাচ্ছে
নিরবধি;

সূর্যের আলো সানগ্লাসে বড্ড লাল

তুমি দিনেও ‘তারা’ দেখো কিন্তু আমার চোখ
অপঘাতের অমাবস্যা!

বিশ্রাম নাও, তুমিও ক্লান্ত আর মরীচিকাও

এখনও দেখি!

ডেলিভার্ড হয় কিন্তু রিড হয় না।

চোখের আড়াল

আমি ভুল করেছি!
     জানলা দিয়ে গণতন্ত্র আহ্বানে কখন যে রাজতন্ত্র
.                  মাথাচাড়া দিল, তা আমি বুঝিনি;

বিনামূল্যে ‘প্রাপ্য প্রসাদ’ বিলি করছে তাঁবেদারের দল

এসবের মধ্যে একটু রোদ্দুর এসে দেখাতে চেয়েছিল
গণতন্ত্রের পূর্ণিমা, মুক্তির যুক্তি ও অহিংস মুভমেন্ট।

ধীরে ধীরে আবার উঠবে রোদ্দুর; সামান্য মেঘ কি কখনও আটকাতে পারে?

ভুল তো আমাদের, নয়তো মন্ত্রের!

যার ফাঁকেই এসেছিল রাজতন্ত্র

আবার নতুন সূর্য রোদ্দুর দিক, আলোকিত হোক অন্ধকার।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
4 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঢাকায় বিবেকানন্দ: ১২৫ বছর পূর্তি

ঢাকায় এসে খুব বেশি বক্তৃতা দেননি তিনি। সম্ভবত তাঁর শারীরিক অসুস্থতাই তার কারণ। মার্চের তিরিশ তারিখে রমাকান্ত নন্দীর সভাপতিত্বে ঢাকার বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয়) ভাষণ দেন। বিষয় ‘আমি কী দেখেছি’। শ্রোতার সংখ্যা ছিল দু’হাজার। পরদিন অর্থাৎ ৩১.০৩-এ বক্তৃতা দেন পোগোজ স্কুলে, তিন হাজার দর্শকের সামনে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম’। দুটি সভাতেই শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ, আপ্লুত ও উদ্বুদ্ধ।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

যত মত তত পথ

বহুদিক দিয়েই একজন স্বতন্ত্র মননের ধর্মীয় সাধক। তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ধারণাতীত, আর তা কেবল তাঁর স্বদেশ বা এই উপমহাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। এবং দিনের পর দিন তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বাড়ছে। শ্রীরামকৃষ্ণ এবং সারদামণি ও স্বামী বিবেকানন্দকে কেন্দ্র করে যে ভাব-আন্দোলন, তার ফলশ্রুতিতে তাঁদের নিয়ে নিয়ত চর্চা ও গবেষণা হয়ে চলেছে। পৃথিবীব্যাপী দুশোর ওপর রামকৃষ্ণ মিশনের কার্যাবলি প্রমাণ করে (প্রতিবছর এর সংখ্যা বাড়ছে), আজকের এই অশান্ত বিশ্বে তাঁরা মানুষের কতখানি আশ্রয়।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব ছয়]

রবীন্দ্রভাবনায় যে নৃত্যধারা গড়ে উঠল তা দেশিবিদেশি নৃত্যের সমন্বয়ে এক মিশ্র নৃত্যধারা, তৎকালীন শিক্ষিত শহুরে বাঙালির সংস্কৃতিতে যা নতুন মাত্রা যোগ করল। নাচের প্রতি একরকম আগ্রহ তৈরি করল, কিছু প্রাচীন সংস্কার ভাঙল, মেয়েরা খানিক শরীরের ভাষা প্রকাশে সক্ষম হল। এ কম বড় পাওনা নয়। আরও একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, শিল্পক্ষেত্রে ভাবের সাথে ভাবনার মিল ঘটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টির প্রচেষ্টা। গতে বাঁধা প্র্যাক্টিস নয়। নিজের গড়ে নেওয়া নাচ নিজের বোধ অনুযায়ী।

Read More »