Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

সুকৃতি সিকদারের কবিতা

টান

অগণিত তারার চোখের দিকে চেয়ে
মনে হল চাপই সহায়…
তা না হলে উড়েই যেতাম।
নখের আঁচড় খেয়ে কবিতাও সরে যেতে চায়
একটা দুমড়ে যাওয়া বয়সের পরে।
কপালের দোষে আর বাঁধে না লটারি,
তবুও কাটাতে যাই দানা
হলহলে নলের ভিতর দিয়ে সোজা
ঘাই মারে ঘোড়া মারে ঘাই।

সমস্ত কঁকিয়ে ওঠা থেমে গেলে নুনে
কথা বলে ওঠে কিছু জল।
জীবাশ্ম আসল থেকে চিরকাল দামি
মণিদের প্রতিটা আসরে।

চকমকি পাথর বিক্রেতা
রঙিন জালের জলে তোমাকে হারায়।

তোমার আয়নাখানি চিড় ধরে গেছে।
রূপার প্রলেপ যেইদিকে
খেয়ে গেছে ধরার ধারণা।
আর কে আমাকে পাবে হিমে?

গজল শোনার অছিলায় রাতে কিছু
জোনাকি তীরের মতো গান গেয়ে যায়।

জেগে থাকবার লোভে কর্নিয়ায় জমে আছে মোম,
তোমার চোখের কালো খেয়ে গেছে বাড়ির প্রদীপে।

ফলে তুমি আমাকে ছুড়েই ফেলে দাও।
না হলে নিজেই আমি ছেড়ে চলে যাব।

ঘুমকে অনীহা করে করে
চোখও পাথর হয়ে গেলে
বাতাসের কাঁধে চেপে আমার নিশ্বাস
তবুও তো শিয়রের বালিশে দাঁড়ায়।

রোজ যাব, রোজ…
যদিও বা কামারের মতো
ধাতু নিয়ে হবে না কারার।

নিশুটে পোকার মতো অনিদ্রায় তুমি
চোখ খুলে বসে নিশিদিন।
হয়তো ঘড়িতে আর বাজবে না দুটোর অ‍্যালার্ম!

দূরত্বকে আমি গার্ডারের মতো করে
বুঝতে চেয়েছি কোনো ঘরের ভিতরে।
অথচ ঘরের মধ্যে এত এত ঘর হয়ে গেছে
হারিয়েছে ইঁদুরের সঠিক ঠিকানা।

বিড়ালও বিভ্রান্ত প্রায়, কেবল দুধের
খুশবু যেদিক থেকে পায়
সেই দিকে ছুটে যায়
মেও মেও করে।

তোমাকে বলার কিছু নেই
এই খাওয়া চাঁদের সমীপে
রাতকে নির্জন এক দ্বীপ মনে হয়।
কেউ কি ওখানে আছে?
প্যাঁচার গুহার মতো গলিত আঁধারে
একটু একটু করে সরিয়ে দিয়েছ।

কে আর তারাকে বোঝাতে চায়
মেঘের খবর!

আমি ঈশ্বরের মতো কোনো
সুগন্ধি নই যে হাওয়ায় হারিয়ে যাব।
জন্তুর মতন খিদে নিয়ে পেটে বুক
তোমার ঘৃণার মুখে পাতিয়ে দিয়েছি।

ত্রিসপ্ত জ্ঞানের ধারণায় দেহ
দেহীকে করেছে সুতো দান।
এখন সে সুতোয় এত টান!
বলির পাঁঠার মতো জেদি
হয়তো পটাশ করে সম্পর্ক চুকিয়ে দিল হায়।

চিত্রণ : চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
সীমানা মুখোপাধ্যায়
সীমানা মুখোপাধ্যায়
3 years ago

ভালো লাগল

Recent Posts

সন্দীপ মজুমদার

মামলায় জয়ী হয়ে থোড় কুঁচি দিয়ে কালীর আরাধনা করেন জমিদার-গিন্নি

রূপনারায়ণ মজুমদারের হাত ধরেই মা মহাকালীপুজো শুরু হয়। যেহেতু জমিদার-গিন্নি পুজোর উপকরণ হিসাবে কলা-থোড় কুঁচোর কথা মুখে এনেছিলেন, তাই পুজোর অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে সেদিন দেবীকে থোড় কুঁচোও উৎসর্গ করা হয়েছিল। আজ ১৬৯ বছর পরেও সেই রীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এখনও মজুমদার বাড়ির কালী পুজোয় অন্যান্য সকল উপকরণের সঙ্গে মা মহাকালীকে থোড় কুঁচানো দেওয়া হয়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বরিশাল শ্মশান-দীপালি

সমগ্র উপমহাদেশে বরিশাল শ্মশান একটি বিশেষ কারণে অনন্য। এই শ্মশানের বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিবছর কার্তিকী অমাবস্যায়, (যাকে শাস্ত্রে ‘অশ্বযুজা’ মাস বলে) সেখানকার এই শ্মশানে যে কালীপুজো হয়, সেখানকার পুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশীর রাতে লক্ষ লোকের সমাবেশ হয়। উদ্দেশ্য, ওখানে যাঁদের দাহ করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। সমগ্র শ্মশান জুড়ে কয়েক হাজার মঠ বা স্মৃতিসৌধ আছে, মুসলমানদের যেমন আছে বনানী বা অন্য বহু গোরস্তানে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বৌদ্ধসম্প্রদায়ের প্রবারণা ও কঠিন চীবরদান উৎসব

বিশ্বের বহু দেশেই এই উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হয়। স্পেন ও ফ্রান্স-সহ ইয়োরোপীয় দেশে চীনা, জাপানি, বাঙালি বৌদ্ধরা পালন করেন যেমন, তেমনই বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি থেকে কুয়াকাটা-কলাপাড়া এই উৎসবে মেতে ওঠে। ইওরোপীয়দের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকবছর আগে দালাই লামা যেবার শিলিগুড়িতে তাঁর বার্ষিক অনুষ্ঠান করলেন, সেবার প্যারিস থেকে আগত বেশ কিছু ফরাসির সঙ্গে আলাপ হয়, যাঁরা বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত। তাঁদের কাছেই শুনেছিলাম, ফ্রান্সে বহু মানুষ বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নিচ্ছেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গাপুজো: অতীত দিনের স্মৃতি

মহালয়া দিয়ে হত পুজোর প্রকৃত সূচনা। শরতের ভোররাতে আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচারিত এই অনুষ্ঠানটির শ্রোতা অন্তহীন, এবং এখনও তা সমান জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও অনুষ্ঠানটির শ্রোতা অগণিত। আমাদের শৈশবে বাড়ি বাড়ি রেডিও ছিল না, টিভি তো আসেইনি। বাড়ির পাশে মাঠে মাইক থাকত, আর প্রায় তিনশো গজ দূরের এক বাড়িতে মাউথপিস রাখা থাকত। সেখান থেকে ভেসে আসত মহালয়ার গান, ভাষ্য।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গাপূজা, মূর্তিপূজা: দেশে দেশে

আসলে বাঙালি নিরন্তর এক অনুসন্ধানী, ব্যতিক্রমী, অভিনব-চিন্তক, ক্রমবিকাশপ্রিয় ও অন্তিমে রহস্যময় জাতি। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলমান আস্তিক নাস্তিকে মিলিত এই জাতি সঙ্ঘারাম আর মিনার, ধ্বজা ও ওংকার, জগমোহন-মিরহাব-স্তূপ-ভস্মাচ্ছাদিত এক জাতি, নিজ মুদ্রাদোষে নয়, মু্দ্রাগুণে আলাদা।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

শারদোৎসব: বাংলাদেশে

দুর্গাপুজো কেবল ভক্তের জন্য-ই নয়, ভাল লাগাদের জন্যও। যে ভাল লাগা থেকে ভাই গিরীশচন্দ্র সেন কোরানশরীফ বাংলায় অনুবাদ করেন, অদ্বৈত আচার্য যবন হরিদাসের উচ্ছিষ্ট নিজহাতে পরিষ্কার করেন, স্বামী বিবেকানন্দ মুসলিম-তনয়াকে কুমারীপুজো করেন! দুর্গা বাঙালির কাছে, ধর্মনির্বিশেষে আগ্রহের, যেহেতু এই দেবী পরিবারসহ আসেন, আর সঙ্গে নিয়ে আসেন কাশফুল আর শিউলি। তাই তো সনাতন রামপ্রসাদ, খ্রিস্টান মাইকেল, ব্রাহ্ম রবীন্দ্রনাথ এবং মুসলমান কাজী নজরুল দুর্গাকে নিয়ে কলম না ধরে পারেননি!

Read More »