Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

জীবনকথার গল্প-গাঁথা

“এইসব আশ্চর্য গল্পের দল, প্রত্যেকের নিজস্ব প্রাণ আছে, প্রভাবিত করার ক্ষমতা আছে। … প্রত্যেকেই প্রত্যেকের থেকে আলাদা। কিন্তু মিলেমিশে গেলে তাদের আর আলাদা করা যায় না। সবটা মিলিয়ে একটা বহতা শক্তি।”

‘সদাবাহার’ একটি অপ্রকাশ শক্তির নাম। ‘সৃষ্টিসুখ’ থেকে প্রকাশিত লেখিকার দ্বিতীয় গল্প সংকলন, সদাবাহার। মাত্র ১০৪ পাতার ছোট্ট পেপারব্যাক, যত্নে ছাপা।

গল্পের কাছে কি চাই আমরা? নিটোল কাহিনি? অসামান্য বলার ভঙ্গিমা? অপরূপ শব্দছন্দ? গল্প হয়ে উঠতে এই সবক’টা গুণই অল্পবিস্তর লাগে তো বটেই। আর সকলের কথা বলতে পারি না, তবে এই পাঠকের এই সবকিছু এক যোগে পেলেও মন ওঠে না, যদি না সেই গল্প কোন ‘সীমার মাঝে অসীম’ জীবনবোধের পরিচয় দেয়। আর শুধু এই বিস্তৃত জীবনবোধের কারণেই প্রতিভা সরকারের লেখার কাছে ঘুরে ফিরে আসতে হয়।

চোদ্দটি গল্প। লেখিকার প্রথম গল্প-সংকলণ গুরুচণ্ডালি থেকে প্রকাশিত ‘ফরিশতা ও মেয়েরা’ পাঠের অসামান্য অভিজ্ঞতার কথা স্মরণে ছিল। তাই পাঠক হিসেবে কিঞ্চিৎ শঙ্কাও ছিল, যদি এই সংকলন সেই মানের মর্যাদা না রাখে। এমনিতেই রোকু’র করা প্রচ্ছদটি তেমন একটা পছন্দ হয়নি। সেই খুঁতখুঁতুনি নিয়েই বইয়ের পাতা ওল্টানো। তবে একেবারে শুরুর গল্প ‘সহোদরা’ পড়েই বোঝা যায় সেইসব আশঙ্কা অমূলক। প্রথম গল্পেই আবারও কলমের জাত চেনা যায়। নিখুঁত মুনশিয়ানায় প্রতিভা মধ্যবিত্ত বাড়ির দুই কিশোরী বোনের ঈর্ষা-ভালবাসার কাহিনি শব্দে গাঁথেন। সেই যে পাঠকের চাহিদা উঁচু তারে বাঁধা হয়ে গেল, পরের তেরোটি গল্প এক অসম্ভব দক্ষতায় সেই মান ধরে রাখা। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি! ‘ফাঁসি কা ফান্দা’-র মুন্নুর কথাই ধরা যাক। এক খুনি কয়েদি মুন্নু মাস্টার, গারদের আড়ালের ডন, ওয়ার্ডেনের প্রসাদধন্য। তার কাজই হল ফাঁসির দড়ি পাকানো, সে কাজ নিয়ে তার ভারি গর্ব, সে কাজে মুন্নু এক্সপার্টও। অথচ ফাঁসির দড়ি পাকাতে পাকাতে তার মুখ খালি থুতুতে ভরে যায়। ডাক্তার বলেন, বিবেকের কামড়। এ দেশে বিচারের যা অবস্থা, যদি কোনও নিরাপরাধকে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়! সমকালের ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে এই বিবেকী অবচেতন মনের প্রভাব কীভাবে ছায়া ফেলল মুন্নুর জীবনে কাহিনির সেই অংশটুকু না হয় এই পরিসরে উহ্যই থাকল, শুধু এইটুকু বলা থাক যে একটা উচ্চকিত রাজনৈতিক ব্যর্থতার ঘটনার অবয়বকে ঘিরে এই মৃদুস্বরের মায়াবুনন পাঠান্তে এক অসহ্য মনোবেদনার সৃষ্টি করে। থম ধরিয়ে বসিয়ে রাখে।

অবশ্য এমনিতেও এই গল্পগুলো একটানে গড়গড়িয়ে পড়ে গেলাম আর ভুলে গেলাম, সেই গোত্রের না। প্রতিটি গল্পের পরে একটু থমকাতে হয়, একটু ভাবতে হয়। এরই মধ্যে ‘কোর্ট মার্শাল’ আর ‘দাঙ্গা পরবর্তী’ গল্পদুটি পড়তে পড়তে কেমন যেন মনের মধ্যে এক হয়ে জুড়ে যায়। ‘কোর্ট মার্শাল’ গল্পে যে রিক্ত দাম্পত্যের অবিশ্বাসের কথা, সেই একই অবিশ্বাস যেন হালকা করে ছুঁয়ে যায় পরের গল্পটিতেও। আর সেই পটভুমিকাতে প্রতিভা রচনা করেন নরম পরাগমিলনের দৃশ্য: “এক-একটি ধান গাছের একাধিক শিষে থরে থরে সাজানো প্রত্যেকটি নৌকাকৃতি ধানের দানা দুভাগে খুলে গেছে। প্রত্যেকটির ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে ঝুলছে, বাইরে দুলছে, দোল খাচ্ছে ডাঁটিসহ একাধিক সাদা ধানফুল। হাওয়ায় উথালপাথাল নিষিক্ত হতে চাওয়া সেই অজস্র জেদি সাদা ভ্রূণ। খুকিদি বলল, আর যেন কল্পনাতেও দেখতে পেলাম, ভেতরের পরাগথলি থেকে মিহি পরাগের গুঁড়ো আশীর্বাদের মতো নেমে আসছে তাদের ঢেকে দিতে। বাতাসে সে কী সুগন্ধ!” আর এই মেদুর শব্দ-জাদুর পরেই সেই অমোঘ উচ্চারণ, “ধ্বংস নয় রে, নতুন কিছু করতে চাওয়া, নতুন সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষাই সব”। প্রতিভার সব গল্পেই একটা নিটোল পারিপাট্যের ছাপ থাকে। একটুও অগোছালো নয় কোথাও, না ভাষায়, না ভাবে। ভাষার আধুনিকতম স্মার্টনেস বা ফর্মের ভাঙাচোরা হয়তো এখানে মিলবে না। তবে নিখুঁত শব্দচয়নের জাদু তাঁর গল্প বলার ভঙ্গির সঙ্গে মিশে একটা ক্লাসিক আবেদন তৈরি করে। সেখানেই তাঁর গল্পের টান। তাঁর নিজস্ব সিগনেচার।

গল্পগুলো এতটাই ভিন্ন স্বাদের এবং মনে ছাপ রেখে যাওয়া যে প্রত্যেকটাই বিস্তৃত আলোচনার দাবি রাখে। তবে স্বল্প পরিসরে তা তো আর সম্ভব না। অগত্যা সে লোভ সংবরণ করা যাক। তবু এই সংকলণের নারীকেন্দ্রিক গল্পগুলির মধ্যে ক’টি গল্পের কথা আলাদা করে না বললে অপরাধ হবে। ‘চড়াই পাখির মাংস’ গল্পে অতি আশ্চর্যভাবে ছোটবেলায় শোনা পারবারিক শিক্ষার গল্পগাথা আর জীবনের সীমানা আবছা হয়ে যায়, আর সেই পরিসরে কেমন চুপিসারে ঢুকে পড়ে পারিবারিক হিংসার এক স্বল্প উচ্চারিত ধূসর হাওয়া। ‘দেবী’-তে মাছুয়াদের গল্প চাঁদের আলো ধোওয়া রাতে আস্তে আস্তে রূপকথা হয়ে ওঠে, একটি স্বেদ-পরিশ্রম মাখা আইবুড়ো, কুচ্ছিত জীবন বদলে যায়, কী বদলে দেয় তাকে? তবে এই বইয়ের সেরা চমকগুলোর একটি অবশ্যই ‘খেড়া’। আঞ্চলিক ভাষার অনবদ্য প্রয়োগে শান্ত অচঞ্চল গল্প বলার ভঙ্গিটি যেন আরও সূচীমুখ হয়ে ওঠে। কী চোখে দেখব একে? প্রান্তিক কন্যার প্রান্তিকতর হয়ে পড়ার গল্প, নাকি খেড়িয়া কন্যার জঙ্গলের খেড়ার মতন প্রাণ না থাকতেও ধরা দেওয়ার অদম্য প্রাণশক্তির কাহিনি হিসেবে? যেভাবেই দেখা যাক না কেন, এই গল্পের অসামান্য ডিটেলিং, রূপকের ব্যবহার কিছুতেই নজর এড়াবে না।

আর এই রকমই আরেকটি গল্প হল ‘প্রেম’, চোরাশিকারীর লালসার বিপ্রতীপে গুলি-এড়িয়ে কোনক্রমে বেঁচে যাওয়া গজ-দম্পতি জোট বেঁধে জীবনের উদযাপনে মাতে। বনের পশু, নদীর মাছকে যার রক্ষা করার কথা, সেই মাসানবাবাও যখন চোখ বুজে থাকেন, তখন তাদের সেই মিলন মহালগনকে রক্ষা করে এক অশিক্ষিত বন-কুড়ানির জঙ্গল-জীব জড়িয়ে বাঁচার জীবনদর্শন। এরপর গোটা গ্রামের লোক যখন হাতির পাল খেদানোর উল্লাসে মত্ত, প্রতিভা লেখেন, “শুধু এই দুজন মানুষ–মানুষী, মাইয়া-ভাতার অঙ্গলাল আর পারুল তাতে যোগ না দিয়ে বেড়ায় হেলান দিয়ে বসে রইল বহুক্ষণ। তারপর যখন সব আওয়াজ থেমে গিয়ে শুধুই ঝিঁঝি পোকা ডাকছে বটগাছের নিচে অকালমৃত শিশুদের লুকিয়ে রাখা কবর ঘিরে, তখন অঙ্গলাল তার শুঁড়ের মতোই লম্বা হাত আর খেটে খাওয়া পাঞ্জা দিয়ে পারুলকে আঁকড়ে ধরল।”

রাতের অন্ধকারে সৃষ্টির আখর লেখা হয় আবার। জীবনেরও। আশা-জাগানিয়া।

সদাবাহার।। প্রতিভা সরকার।। সৃষ্টিসুখ।। ১৬০ টাকা

4.2 5 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
অমিতা চজ্রবর্ত্তী
অমিতা চজ্রবর্ত্তী
2 years ago

দারুন লাগলো লেখাটা। কিন্তু রেটিং দিতে পারছিনা। আমি তো ফুল রেটিং দিতে চাই, কিন্তু সিস্টেমে কিছু প্রব্লেম হচ্ছে। — অমিতা চক্রবর্ত্তী

Last edited 2 years ago by অমিতা চজ্রবর্ত্তী

Recent Posts

রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সোমেন চন্দ: এক বহ্নিময় কথাকার

মাত্র সতের বছর বয়সে তিনি একটি উপন্যাস রচনায় হাত দিয়েছিলেন, যদিও তা অসমাপ্ত থাকে। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘বন্যা’। পরবর্তীকালে উপন্যাসটি অসমাপ্ত-ই থেকে যায়। আরও দুঃখের বিষয়, এর বৃহদংশ হারিয়েও গেছে। আজ যে সোমেন চন্দের লেখককৃতির জন্য আমরা তাঁকে স্মরণ করি, তা হল তাঁর বেশ কিছু অসামান্য ছোটগল্প। সংখ্যায় খুব বেশি নয়, মাত্র চব্বিশটি। আরও কিছু গল্প লিখলেও তা কালের ধুলোয় হারিয়ে গেছে। গল্পের সংখ্যা সামান্য, তবে অসামান্যতা রয়েছে সেগুলির রচনার পারিপাট্যে, বিষয়বস্তু চয়নে, শিল্পিত প্রকাশে ও লেখনীর মুনশিয়ানায়। এছাড়া তিনি দুটি নাটিকাও লেখেন, ‘বিপ্লব’ ও ‘প্রস্তাবনা’। লেখেন কিছু প্রবন্ধ। তাঁর ছোটগল্পগুলি এতটাই শিল্পোত্তীর্ণ ছিল যে, তাঁর জীবিতকালেই একাধিক ভাষায় তা অনূদিত হয়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »