Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ভেরা রুবিন: আলোর পথযাত্রীর কৃষ্ণ-বস্তু আবিষ্কার

“Worldwide, half of all brains are in women.”— Vera Rubin

মাত্র দশ বছর বয়স তখন। ছোট্ট মেয়েটি তার শোওয়ার ঘরের উত্তরমুখী জানলা দিয়ে আকাশের ঝিকমিক নীলচে হলদেটে তারাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। রাতের আকাশে তারাদের স্থান পরিবর্তন লক্ষ্য করে রোজ। অনেক রাত পর্যন্ত ঘুম আসে না তার। অন্ধকার রাতে আকাশ-ভরা তারা দেখে আশ্চর্য হয়ে ভাবে, তারারা আসলে ঠিক কী? বাবার গাড়িতে পেছনের সিটে বসে হাঁ করে দেখে চাঁদ যেন পেছন পেছন অনুসরণ করছে তার।

মেয়েটির নাম ভেরা রুবিন। পুরো নাম ভেরা ফ্লোরেন্স কুপার রুবিন (Vera Florence Cooper Rubin, ১৯২৮-২০১৬)। জন্ম পেনসিলভ্যানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায়। দশ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন ওয়াশিংটন ডিসিতে। মেয়ে হয়ে রুবিন যে কী করে জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা চালাতে পারবে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাবার যথেষ্ট সংশয় ছিল। তবুও মেয়েকে উৎসাহ দেওয়ায় কোনও খামতি ছিল না বাবার। নিজের টেলিস্কোপ বানাতে চেয়েছিলেন রুবিন। এর জন্যে যা যা দরকার মেয়েকে সব এনে দেন বাবা। রুবিনকে একজন অ্যামেচার জ্যোতির্বিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন বাবা। এতে খুব সুবিধা হল রুবিনের। সেখানে জ্যোতির্বিদদের মিটিংগুলিতে অংশগ্রহণ করতে পারতেন তিনি। এভাবেই শুরু হয় রুবিনের পথচলা।

প্রসিদ্ধ বাসার মহিলা কলেজে স্কলারশিপ পেয়ে ভর্তি হলেন রুবিন। সেখানে জ্যোতির্বিদ্যাকে নিলেন মুখ্য বিষয় হিসেবে। এই সেই কলেজ যেখানে প্রথম পেশাদারী মহিলা জ্যোতির্বিদ মারিয়া মিচেল অধ্যাপনা করেছেন তেরো বছর। এখান থেকে স্নাতক পাশ করে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্যে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে আবেদনপত্র পাঠালেন। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি সরাসরি তাঁর আবেদনপত্র নাকচ করে দিয়ে জানাল যে, ‘প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় মেয়েদের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করে না।’ অবশেষে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলেন রুবিন, সেখানে তিনি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ফিজিক্স পড়লেন। পরে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি করলেন স্বনামধন্য তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী জর্জ গ্যামোর কাছ থেকে।

বাসার মহিলা কলেজে ভেরা রুবিন, ১৯৪৭।

রুবিনের পক্ষে প্রতিটি পদক্ষেপ অত সহজ ছিল না। জ্যোতির্বিজ্ঞানের মত একটি পুরুষ অধ্যুষিত ক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে রুবিনকে। একবার কী হয়েছিল বলি। ক্যালিফর্নিয়ায় মাউন্ট প্যালোমার অবজার্ভেটরির ছিল সেসময়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিস্কোপ। রুবিন তাঁর একটি বিশেষ কাজের জন্যে সেখানে গেলেন। কিন্তু ওই অবজার্ভেটরিতে মহিলারা কাজ করতে পারতেন না। সেখানে একটিই মাত্র পুরুষদের শৌচাগার। মহিলাদের কোনও শৌচাগার ছিল না। রুবিন আইনি সাহায্য নিয়ে সেখানে গেলেন। কাজ হয়ে গেলে একটি কাগজে স্কেচ পেন দিয়ে স্কার্টের ছবি এঁকে শৌচাগারের দরজায় সাঁটিয়ে দিলেন।

মহাবিশ্ব সম্পর্কে একাধিক অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কার করেছেন। যা মহাবিশ্বের অনেক রহস্য উন্মোচিত করেছে। ভেরা রুবিনের যুগান্তকারী কাজ সম্পর্কে সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব। তার আগে একবার ঝালিয়ে নিতে চাই, তারাজগৎ বা ‘গ্যালাক্সি’ কী? এক-এক জায়গায় লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি তারা গায়ে গায়ে লেগে এক একটি বিশাল তারাজগৎ গড়ে তুলেছে। ইংরেজিতে সেই তারাজগৎকে ‘গ্যালাক্সি’ বলে। আমরাও এরকম একটি তারাজগতে বাস করি। তার নাম ‘ছায়াপথ’ বা ‘মিলকি ওয়ে’। আমাদের এই ছায়াপথের মধ্যে রয়েছে আনুমানিক দশ হাজার কোটি তারা। রাতের আকাশে খালিচোখে যে কয়েক হাজার তারা দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসে, ওরা সবাই এই ছায়াপথের বাসিন্দা। একটি তারা থেকে আর একটি তারার দূরত্ব বহু কোটি কিলোমিটার। আমাদের অন্যতম প্রতিবেশী তারাজগৎটির নাম হল ‘অ্যান্ড্রোমিডা’। আমাদের ছায়াপথ থেকে এটির দূরত্ব কুড়ি লক্ষ আলোকবর্ষ।

১৯৭০ দশকের শেষের দিকে রুবিন ‘অ্যান্ড্রোমিডা’ গ্যালাক্সির বিভিন্ন অংশের অন্তর্গত তারাদের আলো স্পেকট্রোমিটারের সাহায্যে পরীক্ষা করছিলেন। একটি বিষয় লক্ষ্য করে দারুণ আশ্চর্য হয়ে গেলেন রুবিন। ছায়াপথের পরিক্রমণ গতির লেখচিত্রের যে কার্ভেচার সেগুলি অদ্ভুতভাবে বেঁকে যাচ্ছে। ছায়াপথের এই যে চরিত্র, তা নিউটনের গতিসূত্র মান্য করছে না, তা বুঝতে পারলেন রুবিন। তাঁর এই পর্যবেক্ষণের ফলাফল ক্লাসিক্যাল মেকানিকসের বিরুদ্ধ আচরণ করছে। অর্থাৎ যেভাবে অন্য গ্রহরা সূর্যের চারিদিকে ঘোরে তার থেকে আলাদা। রুবিন বুঝতে পারলেন, এমন ঘটনা সম্পূর্ণ অজানা কোনও এক ধরনের বস্তুর অস্তিত্বের ইঙ্গিতবাহী ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। তখনও রুবিন জানতেন না, তাঁর এই অজানা ‘ম্যাটার’-ই পরবর্তী সময়ে পরিচিত হবে ‘ডার্ক ম্যাটার’ হিসেবে। বস্তুত জ্যোতির্বিদ ভেরা রুবিন-ই প্রথম প্রমাণ করেন ‘ব্ল্যাকবডি’ অস্তিত্বের কথা।

ফটোগ্রাফিক প্লেট নিরীক্ষারত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভেরা রুবিন, ১৯৭৪। সৌজন্যে: Carnegie Institution for Science

রুবিনের গবেষণার এই যে ফলাফল তা প্রথমে সন্দেহের চোখে দেখা হয়েছিল। প্রায় চার দশক পরে রুবিন আবিষ্কৃত ‘ডার্ক ম্যাটার’ যে একটি স্বীকৃত বস্তু বা পদার্থ তা মান্যতা পেয়েছে। যা অন্য কোনও বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত হয় না। যার থেকে কোনও আলো বিচ্ছুরিত হয় না। ‘ডার্ক ম্যাটার’-এর অস্তিত্ব কেবল বোঝা যায় ‘অভিকর্ষজ ক্রিয়া’ থেকে। যা তারা, গ্যালাক্সির ওপর কার্যকরী হয়। তাঁর যুগান্তকারী গবেষণা থেকে গ্যালাক্সির মধ্যে ‘ডার্ক ম্যাটার’-এর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গিয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আজ জেনেছেন যে ‘ডার্ক ম্যাটার’ ইউনিভার্সের চুরাশি শতাংশ জুড়ে আছে। তবে কী দিয়ে তৈরি এই ‘ডার্ক ম্যাটার’, তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে ধাঁধার মত। ডার্ক ম্যাটারের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে জানা আজও একটি অমীমাংসিত রহস্য। আর এই রহস্যের সত্য যখন জানা সম্ভব হবে তখন মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমরা এতদিন যা ভেবেছি, তার বহু ধারণা বদলে যাবে।

তাঁর কাজের যে বিপুল অবদান তাতে ভেরা রুবিন যে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, এমনটাই মনে করতেন তাঁর সহকর্মী জ্যোতির্বিদরা। নোবেল পুরস্কার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যোগ্যতম আবিষ্কারকের প্রতি এমন বঞ্চনা নতুন কিছু নয়। নোবেল পুরস্কার না পেলেও, সারা জীবনের দিগদর্শী কাজ ও কৃতিত্বের জন্য রুবিন অনেক সম্মাননা লাভ করেন। ব্রুস পদক, রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতির স্বর্ণপদক ও জাতীয় বিজ্ঞান পদক পেয়েছেন। সারা জীবন বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রবক্তা ছিলেন তিনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা আজ জানেন যে, তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানের একজন পথিকৃৎ। দীর্ঘ বেশ কয়েক দশক উচ্চমানের গবেষণা করে ২০১৬ সালে ৮৮ বছর বয়সে মারা যান রুবিন।

তিনিই প্রথম নারী যার নামে একটি বৃহৎ মানমন্দিরের নামকরণ করা হয়েছে, ২০১৬-তে যেটির প্রতিস্থাপনা শুরু হয়েছে। এই ‘মানমন্দির’-টি উত্তর-মধ্য চিলিতে অবস্থিত ভেরা সি. রুবিন অবজারর্ভেটরির হিসেবে পরিচিত। ২০২৩-এর অক্টোবরে চালু হয়ে যাবে এই মানমন্দির। আজীবন মহিলাদের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের অজস্র পুরুষ ও নারী বিজ্ঞানীদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।

আজ ২৩ জুলাই, ভেরা ফ্লোরেন্স কুপার রুবিনের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাই।

চিত্র: গুগল
5 4 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »