Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

রম্যগদ্য: অনুপ্রবেশকারী

ছোটবেলা থেকেই দেখেছি আমার চারপাশে অনেক অনুপ্রবেশকারী। প্রথমটায় বেশ গুঁতো খেয়েছিলাম। বড় মিস্ত্রি কিশোরীকাকু আর তার সহকারী আল্গুরাম থাকতেন কাছেই। তারাই তখন আমাদের বাড়ির দোতলা তৈরির কাজে রয়েছেন। নানা কাজে সকালে কী সন্ধ্যায় তাদের আস্তানায় যেতে হত। তেমনই একদিন দেখি আল্গুরামের দরজার সামনে এক পেল্লায় প্রাণিসম্পদ। ঠিক ছাগল বলতে মন চায় না; আমার সমান উঁচু, রাশভারি দাড়ি আর লম্বা কান! পেরু থেকে লামা এল নাকি! নাকি উটের ছানা! এসব ভাবতে ভাবতে সবে একটু দাড়িতে হাত বোলাতে গেছি আর তখনই এক রাম ঢুঁ। আমিও পপাত চ। আল্গুরাম হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে এসেছে। আমি প্যান্টের ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে উঠছি আর সবিস্ময়ে জিজ্ঞেস করছি, ‘আল্গুকাকু কী গো এটা?’ ‘আরে আরে উইঠে পড়ো উইঠে পড়ো; ইটা আসলি পটনাঈ; নজদিক মৎ যাও।’ আমি তখন কাজ সেরে মায়ের কাছে দৌড় দিতে তৎপর। আমাদের সে সময় মায়েরাই ছিল আজকের দিনের গুগল। ‘মা, মা, সে এক অতিকায়…’ ইত্যাদি ইত্যাদি…। মা বলল, ‘ওরে হাঁদারাম ওটা রামছাগল।’ আমার উপাধির শেষে রাম, আবার ছাগলের নামের আগেও রাম ব্যাপারটা আমার একটু অসম্মানজনক মনে হল। মা তখনও বলে চলেছে, ‘ওরে ওটার খুব কাছে যাসনি যেন, ভীষণ গুঁতো খাবি।’ আমি আড়চোখে নিজেকে দেখছি কোথাও ধুলো লেগে নেই তো! এক গুঁতোয় ধূলিসাৎ হবার অসম্মানটাও এর সাথে যোগ করতে মোটেই ভাল লাগবে না। এখন ভাবি গোরুর সাথে রাম, মা-জননী, (গুঁতোর ভয়ে) ভক্তিভাব তো বেশ খাপ খেত! খামোখা ছাগলের সঙ্গে রাম-হেন নামকে জোড়া কেন বাপু! রামগোরুকে অনায়াসে হারুদের আপিসে বসিয়ে ট্যাঁশগোরু বললে বোঝাই যেত সে মোটেও গোরু নয়। সুকুমার রায়ের ছন্দে মোটেও অক্ষরের টানাটানি পড়ত না।

আরও কয়েকবছর পরে চাকরি ছেড়ে মেজজ্যাঠামশাই আর মেজমা রেঙ্গুন থেকে ফিরে এলেন। সঙ্গে বিস্তর জিনিসপত্র। তার মধ্যে একটা ছিল চাকা লাগানো কারুকাজ করা সেগুন কাঠের বর্মী সিন্দুক।‌ সেই উচ্চাসনে সবুজ-লাল সুতোয় বোনা ‘মায়ের দান’ ও টিয়াপাখি আঁকা চটের আসনে বসে পড়তাম বেশ কিছু দিন। আর-একটি বস্তু ছিল, সেটি নির্জীব নয়, সজীব। এতই সজীব যে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত। তিনি হলেন দাঁড়ে বসা মেজোমার পেয়ারের পাতিলেবু হলুদরঙা ঝুঁটিওলা এক পেল্লায় কাকাতুয়া, কুটুম। প্রথম প্রথম সে গুগাবাবা-র ভূতের গলায় চেঁচাত, ‘ভাত হল’ কিংবা ‘তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি’, এমন সব নির্বিষ শব্দ। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ভোর হল কি না হল তার ‘খোকন ওঠো’, ‘খোকন ওঠরে’ চিৎকার শুরু হল। তারপরে শুরু হত ‘খোকন পড়তে বোস’ ‘খোকন পড়তে বোস।’ তখন আমার সেই বয়সটা, যখন কেউই চায় না বাড়ি ডাকনামটা সবাই জানুক। এদিকে এ কাকাতুয়া নিয়ে আমার পাড়ার আর স্কুলের বন্ধুদের আদিখ্যেতার শেষ নেই। মেজমার প্রিয় পাখি কুটুম। সেও নাকি এক বিদেশিনী। ইন্দোনেশিয়ার কোন সাহেবের কাছ থেকে কেনা। ফলে কোনও অনুযোগে কেউই আমল দিল না। শুধু ঠাম্মি অভয় দিয়ে বলেছিল, ‘ভাবিস নে খোকা। আমি শিখিয়ে পড়িয়ে নেব। আর ক’দিন পর থেকে দেখবি সারাদিন কেমন হরিনাম করে।’ কিন্তু সেই শুভদিন আসার আগেই বিদেশিনী সবার অলক্ষ্যে পায়ের শেকল কেটে মেজমার আদরের ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ ছেড়ে দেশি আকাশে মুক্তির আনন্দে উড়ে গেল। সারাবাড়িতে শোকের ছায়া। আমিও বিমর্ষ; যেন অপরাধ হয়েছে আমার। কিন্তু আমার সত্যি সত্যিই খুব চিন্তা হত। এই অচেনা দেশের অজানা আকাশে কার সাথে কথা বলবে সে! আবার এও ভেবে নিজেকে শান্ত রাখতাম, স্বল্প চেনা কলকাতা থেকে ও হয়তো আকাশপথে ওর চেনা রেঙ্গুনেই ফিরে গেছে! সে পথ তো খুব দূর নয়। আর তা নয়তো হাঁসেদের থেকে পথ চিনে নিয়ে সোজা জাকার্তায় ফিরে গেছে।

এর কিছুদিন পর মামার বাড়ি গিয়ে দেখি একেবারে জোড়া বিস্ময়! ছোটমামার কোলে এক চকোলেট রঙের কুকুরছানা আর ছোটমাসির কোলে এক গালফোলা তুলোতুলো ছেয়ে-রঙের বেড়ালছানাটি। যেই বলেছি, ‘এ কী গো, কুকুরছানা, বেড়ালছানা কোলে তুলেছ কেন?’ মামা-মাসি দুজনেই ফোঁস করে উঠল। নেহাত কোথাকার মুখ্যু এসেছি এমন ভঙ্গি করে তারা সমস্বরে বলে উঠল, ‘জানিস, এরা কোথাকার?’ আমি ভাবলাম এ আবার কী প্রশ্ন! কুকুর-বেড়াল হবে হয় রাস্তার কিংবা কারওর বাড়ি পোষ্যদের ছানাপোনা। ছোটমামা ভয়ংকর গম্ভীর হয়ে বলল, ‘এ খাঁটি স্কটিশ টেরিয়ার ছানা। ছোট ওয়ালডি সাহেব স্কটল্যান্ড থেকে এনেছিল এর মা-বাবাকে।’ জানিয়ে রাখি, আমার মামার বাড়িটি ছিল গঙ্গার ধারে ওয়াল্ডি সাহেবদের বাগানবাড়ির ঠিক বিপরীতে। ড. ডেভিড ওয়াল্ডি সেই উনিশ শতকের মাঝামাঝি ভারতে প্রথম লেড অক্সাইডের কারখানা তৈরি করেন। তাঁর বানানো রেড লেড ছিল বিশ্বসেরা। সেই কারখানা আজও বিরাজমান, শুধু তাঁদের বাগানবাড়ি আর আমার মামার বাড়ি প্রোমোটারদের হাতুড়ির গায়ে ধূলিসাৎ। সে যাক; তখন আমার ছোটমামা স্কটিশ ছানা পেয়ে গদগদ। তার গুণকীর্তন আর শেষ হয় না। ছোটমাসি আর থাকতে না পেরে সেও জুড়ে দিলে তার বেড়াল-শাবকের গুণগান। জানা গেল, সেই বেড়াল তপস্বিনীর আসল দেশ কাবুল। আমি এসব আদিখ্যেতার মানে বুঝলাম না। আমি ভাবছি, আরে বাবা দেশে কি কুকুরছানা বেড়ালছানাটির অভাব পড়েছে? এই তো আমার বন্ধু অনিমেষের নেড়ি ভুলো কেমন চমৎকার শিক্ষা-দীক্ষা পেয়েছে; বসতে বললে বসে, দৌড়ে বল তুলে এনে দেয়। নাড়ু খেলতে না এলে ভুলো লং অফে ফিল্ডিং করে। আর বেড়াল বাপু কোনও কাজে আসে না। শুধু পিকোলোকেই দেখি একপাল হুলো-মেনির দেখাশোনা করে দিনভর। কেউ বাড়ি না ফিরলে সে আবার কাঁদতে কাঁদতে পাড়ায় বাড়ি বাড়ি খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। আমার হুঁশ ফিরতেই দেখি ছোটমামা-মাসি তাদের পোষ্যদের গুণগান থেকে গড়িয়ে ফোঁসফোঁস-ঘোঁৎঘোঁৎ পেরিয়ে হাতাহাতিতে মেতেছে। আর লোম ঝুমঝুম স্কটিশ টেরিয়ার ছানা নরম-গরম তুলতুলে ঘুমন্ত কাবলি বেড়ালছানাটির গায়ে ঠেস দিয়ে দিব্য ঘুমোচ্ছে।

বড় হতে হতেই আমার জ্ঞানচক্ষু খুলল (হয়তো বা)। যেমন সকলেরই খোলে বা খোলে না। কলেজকালের মধ্যেই জেনে গেলাম আমার দেশের সীমানার মধ্যে আছে প্রায় গোটা একটা ম্যাপবইটাই। আফ্রিকা-চিন-রাশিয়া-পাকিস্তান-আফগানিস্তান এমন বিস্তর দেশ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো প্রজাতির পাখি নিয়ম করে কেউ শীতে কেউ গ্রীষ্মে কেউবা বর্ষায় আমাদের দেশে কয়েকমাস কাটিয়ে যায়। না পাসপোর্ট, না ভিসা, না কোনও নাগরিকনামা। দিব্য আছে তারা। ততদিনে জেনে গেছি, আমরা যেসব শাক-সব্জি-ফলমূল খাই তার একের তিন ভাগই আমার দেশের নয়। বিগত প্রায় হাজার বছরের ইতিহাস জুড়ে এইসব প্রজাতিরা আর অতিথি নয়। এই মহাভারতের প্রতিদিনের সঙ্গী। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা আলু-টমেটো, মধ্য আমেরিকার লঙ্কা, মধ্য এশিয়ার রসুন, পশ্চিম এশিয়ার পেঁয়াজ কিংবা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সর্ষে ছাড়া কি ভারতে রান্নাঘর চলবে! আর নিকট ভবিষ্যতে এসেছে আরও কত কী। রঙিন ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি, খেদে চেরি টমেটো, পার্সলে এমন কতকিছু। কমবেশি ৩১ রকমের মাছ ভিনদেশ থেকে এসে জুড়ে বসেছে আমার দেশে। এদের মধ্যে অন্তত আটটিকে বাজারে আমরা রোজ দেখি। অভারতীয় বৃক্ষ-গুল্ম অথবা পুস্প এখন নানান ধর্মীয় আচারের অঙ্গ। মায়ের পায়ের রাঙাজবা প্রথমে কোথায় ফুটেছিল কে তার খোঁজ রাখে! কেনই বা রাখবে! যেদিকে তাকাই এখন অনুপ্রবেশকারী চোখে পড়ে। কেউ পার্থনিয়ামের মতো অযাচিত এসে পড়ে গেড়ে বসেছে, তবে বেশিরভাগই আমাদের স্বার্থের ডাকে সাড়া দিয়ে। আর এমন অগণিত অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে নিয়ে আজকের এই মহাভারত দিব্য আছে।

চিত্র: গুগল
4 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
সুখেন্দু চট্টোপাধ্যায়
সুখেন্দু চট্টোপাধ্যায়
1 year ago

দারুন সুন্দর একটা রম্য লেখা হয়েছে 👍🏻

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »