Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

অথ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস-কথা

‘গণতন্ত্রের একেবারে গোড়ার কথা হল বিভিন্ন মত ও কার্যক্রমের মুক্ত প্রকাশ ও তার নির্ভয় সমালোচনা। এই বিভিন্ন পন্থার মধ্যে কোনটি প্রকৃত জনকল্যাণের পথ, কবে কোন্ দিকে তার সংস্কারের প্রয়োজন— এসব প্রশ্নের শেষ বিচারক জনগণই।’ জনগণের এই ‘বিচারক’ পদের কথা বলেছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় চিন্তাবিদ আবু সয়ীদ আইয়ুব। দুঃখের কথা, জনগণের এই ভূমিকা আজ স্বীকৃতি পায় কেবল ভোট বা নির্বাচনকালে এবং বাকি সময় তাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত শাসকদলের হাতে, তা সে কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকার যে পর্যায়ের হোক, নানাবিধ নির্যাতন ও সন্ত্রাসের শিকার হতে হয় যার একটি গালভরা নাম আছে যেটি হল— রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বর্তমান নিবন্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দুটি রূপের কথা তুলে ধরা যাক— ১. পরোক্ষ বা প্রচ্ছন্ন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং ২. প্রত্যক্ষ বা প্রকট রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।

পরোক্ষ বা প্রচ্ছন্ন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস

রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয় এবং যে সন্ত্রাসকে সরাসরি ভীতিসঞ্চারক বলে চট করে চিনে ওঠা যায় না তা হল পরোক্ষ বা প্রচ্ছন্ন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। এই সন্ত্রাস কাদের মধ্যে কী প্রক্রিয়ায় ছড়ানো হয় তা নির্ধারণ করা যেতে পারে—

এক. সমগ্র রাষ্ট্রে বেকার জনগণের সংখ্যা বহুলমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে বহুবছর ধরে। তাদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে অপরাধমূলক কর্মে নিযুক্ত হওয়ার অবাধ স্বাধীনতা মিলিয়ে দিয়ে শাসকদলের ছত্রছায়া-নির্ভর প্রাণী করে তোলা হয় এবং সেই প্রক্রিয়ায় সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথ বন্ধ করে দিয়ে তাদের মধ্যে যে ভয়ের সঞ্চার করা হয় তা এক প্রকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস যেটি প্রত্যক্ষ করা যায় না সোজাভাবে।

দুই. কৃত্রিমভাবে খাদ্যসংকট ঘনিয়ে তুলে, বাজার-মূল্যবৃদ্ধি বলবৎ করে দেশের দরিদ্র জনগণকে সামান্য কিছু পাইয়ে দিয়ে বশীভূত করে রাখার রাজনীতিতে সব শাসকদলেরই দক্ষতা প্রকাশ করে, দেখা গেছে। এই প্রক্রিয়ায় বিরোধিতা বা বিদ্রোহ করার সাহস কেড়ে নিয়ে যে ভীতি সৃষ্টি করা হয় জনগণের মধ্যে তা হল পরোক্ষ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।

তিন. নানাবিধ পদ-পুরস্কার-অর্থপ্রাপ্তির লোভে শাসকদলের ফেলা ফাঁদে ধরা পড়েন দেশের নাগরিকজনদের মধ্যে শোভাবর্ধনকারী কিয়দংশ। তাঁরা তখন জনগণের ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ-আন্দোলনের সমর্থক হয়ে পাশে দাঁড়াতে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নামিয়ে আনা নির্যাতনের ভয়ে, আড়ষ্ট হয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথ ভোলেন। এই প্রকার ভয়ও তাঁরা পরোক্ষ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ফলেই পান।

চার. শিক্ষা ও চিকিৎসার মত গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার পেতে হলেও জনগণকে শাসক-দল-রক্ষকের মুখাপেক্ষী হতে হয়। সেপথে না হাঁটতে চাইলে জীবনে নেমে আসবে যে শিক্ষালাভের সুযোগ ও প্রাণ হারানোর ভয় তাকেও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ভিন্ন আর কী বলা যায়? অথচ সে সন্ত্রাস সরাসরি প্রত্যক্ষগোচর নয়!

পাঁচ. শাসকদলের বিরোধীদলকে কোণঠাসা হয়ে থাকতে হবে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থেকে। জনগণের জন্য কিছু করতে গেলে অথবা তাদের প্রতিবাদ-আন্দোলনের সমর্থক হলে তার জন্য যে মাশুল গুনতে হবে তাদেরকে, তা ভয়াবহ। এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মূল কথা একটি— জনগণকে বাঁচিয়ে রাখা অথবা কষ্টে রাখা শাসকদলেরই কেবল এক্তিয়ার-ভুক্ত! বিরোধী দলগুলি তাতে নাক গলালে রাষ্ট্র তার নখ-দাঁত দেখাবেই!

আরও নানাবিধ প্রকারে প্রচ্ছন্নভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেশে ক্রিয়াশীল হয়েছে। কয়েকটির কথা বলা হল মাত্র।

প্রত্যক্ষ বা প্রকট রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস

যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আড়ালে থাকে না, বরং প্রকটরূপে দেশবাসীকে ভীত, সন্ত্রস্ত করে তুলে শাসকদলের বশংবদ বানায় তাকে বলে প্রত্যক্ষ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস যার কোনও রাখ-ঢাক থাকে না। কেমন সেই সন্ত্রাসের ধরন-ধারণ?

এক. ভোটগ্রহণকালে ক্ষমতাসীন শাসকদল ভোটপ্রার্থীর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় করে নেয়। একে বলে প্রত্যক্ষ বা প্রকট রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।

দুই. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগণের ওপর নানাভাবে নিপীড়ন নামিয়ে আনা হয় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে। বিভিন্ন প্রকার অভিযোগ তুলে তাদের প্রাণসংশয় ঘটানো হয় অক্লেশে। নিছক অপছন্দের খাদ্যাভ্যাসের কারণেও তাদের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয় এবং নানাবিধ ছুতো খোঁজা সেই লক্ষ্যসাধনে চলতে থাকে। এই প্রকার প্রকট সন্ত্রাস দেশে আজও সক্রিয়রূপে ক্রিয়াশীল।

তিন. নারীধর্ষণ করার মত সন্ত্রাস ঘটানো চলছে নিত্যদিন। এই ধর্ষকরা রাষ্ট্র কর্তৃক চালু রাখা আইনি শৈথিল্যের সুযোগে এবং অপরাধীদের সঙ্গী-সাথি বানিয়ে নেওয়া রাষ্ট্রীয় কৌশলে এই প্রকার অপকর্ম ঘটিয়ে চলে অবাধে। বিরোধীদলের সঙ্গে শত্রুতার সম্পর্কে শাসকদল এই অমানবিক কাণ্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নির্দ্বিধায় এবং তার ফলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হন দেশের মেয়েরা।

চার. বিপদে পুলিশকে রক্ষাকর্তা হিসেবে ভাবা বহুক্ষেত্রে উল্টো ফলের মুখোমুখি করে দেয় জনগণকে। ফলস্বরূপ অর্থদণ্ড, মিথ্যে মামলা, কারাদণ্ড এমনকি প্রাণদণ্ড প্রভৃতির শিকার হতে হয় জনগণকে। এই প্রকার পুলিশি সন্ত্রাস প্রকৃতপক্ষে প্রত্যক্ষ বা প্রকট রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসেরই একটি সর্বনাশা প্রকার।

পাঁচ. শাসকদল-পুষ্ট প্রমোটারি, গুন্ডাগিরি, তোলাবাজি, ক্যাডারগিরি প্রভৃতি কাজে লিপ্ত নেতা-নেত্রী-সহায়করা মূর্তিমান সন্ত্রাস হয়ে ওঠে জনগণের জীবনে। রাষ্ট্রীয় মদতেই এমনটি ঘটে। এই প্রকট সন্ত্রাসের কাছে সকল স্তরের মানুষই জীবনে নিরাপত্তা হারায় অসহায়ভাবে।

উপসংহার

ক্ষমতাতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনীতির সাধকরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস-নির্ভর রাজনীতিকে সচল রাখতে চায় সমগ্র রাষ্ট্রে এবং ক্ষমতার রাজনীতিতে সন্ত্রাস-দণ্ড হাতে নিয়ে জনগণকে ভীত, সন্ত্রস্ত রেখে নিজ অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হওয়া থেকে বিরত রাখে। এই প্রক্রিয়ায় বর্তমানে রাষ্ট্রশক্তি তার শাসনদণ্ড চালু রেখে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী লাভের বস্তু বলে গণ্য করতে অভ্যস্ত হয়েছে।

এই কু-অভ্যাস থেকে রাষ্ট্রশক্তিকে মুক্ত করার ঐক্যবদ্ধ নির্ভয় সাধনা হোক দেশবাসীর— এই প্রকার প্রত্যাশা নিয়ে পথচলা চলছে বহু দেশপ্রেমিকের। সে প্রত্যাশা যেন নৈরাশ্যের অন্ধকারে মুখ না লুকোয়!

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সোমেন চন্দ: এক বহ্নিময় কথাকার

মাত্র সতের বছর বয়সে তিনি একটি উপন্যাস রচনায় হাত দিয়েছিলেন, যদিও তা অসমাপ্ত থাকে। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘বন্যা’। পরবর্তীকালে উপন্যাসটি অসমাপ্ত-ই থেকে যায়। আরও দুঃখের বিষয়, এর বৃহদংশ হারিয়েও গেছে। আজ যে সোমেন চন্দের লেখককৃতির জন্য আমরা তাঁকে স্মরণ করি, তা হল তাঁর বেশ কিছু অসামান্য ছোটগল্প। সংখ্যায় খুব বেশি নয়, মাত্র চব্বিশটি। আরও কিছু গল্প লিখলেও তা কালের ধুলোয় হারিয়ে গেছে। গল্পের সংখ্যা সামান্য, তবে অসামান্যতা রয়েছে সেগুলির রচনার পারিপাট্যে, বিষয়বস্তু চয়নে, শিল্পিত প্রকাশে ও লেখনীর মুনশিয়ানায়। এছাড়া তিনি দুটি নাটিকাও লেখেন, ‘বিপ্লব’ ও ‘প্রস্তাবনা’। লেখেন কিছু প্রবন্ধ। তাঁর ছোটগল্পগুলি এতটাই শিল্পোত্তীর্ণ ছিল যে, তাঁর জীবিতকালেই একাধিক ভাষায় তা অনূদিত হয়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »