Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

আলোময়ী নুড়ি, খ্যাপা খুঁজে ফেরে আলোক-পাথর!

চকমকি পাথর ঠুকে আগুন জ্বালানোর কথা আমাদের জানা। কিন্তু পাথরে আলো জ্বলে, কস্মিনকালে শুনেছেন? হ্যাঁ, ঠিক এমনই এক প্রদীপ্ত পাথর রয়েছে জগতে। সেই আলোধারী পাথর একবার চাক্ষুষ করলে আপনি নিশ্চিত মুগ্ধ হবেন। ঝলমলে সেই পাথরের নাম ‘ইয়োপারলাইট’। উত্তর আমেরিকায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাদু জলের হ্রদ লেক সুপিরিয়র উপকূলের বাসিন্দা এই পাথরের নামকরণ ও ‘আবিষ্কারের’ কৃতিত্বের দাবিদার নিয়ে নিকট-অতীতে শুরু হয়েছিল বিতর্কও।

সেটা ২০১৮-র কথা। ফ্লুরোসেন্ট সোডালাইট সমৃদ্ধ এই সাইনাইট শিলাখণ্ডের প্রথম ‘ভেরিফায়েড’ সন্ধানীর কৃতিত্ব পান এরিক রিন্টামাকি নামে এক রত্ন এবং খনিজ সংগ্রাহক। তিনি এই জ্বলজ্বলে পাথরের নাম রাখেন ‘ইয়োপারলাইট’ (yooperlite)। শুরু হয় এক নব্য প্রস্তর যুগ এবং এই আলোময়ী প্রস্তরখণ্ডের ব্যবসায় যথারীতি ফুলেফেঁপে ওঠেন। এই বাণিজ্যে এরিকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসেন জেসন অ্যাসেলিন নামে আরেক ব্যক্তিও। তিনি এই আশ্চর্য পাথরের নাম দেন ‘লেকশোর অ্যাম্বারলাইট’।

আমেরিকার আপার মিশিগানের আদি বাসিন্দাদের কাছে এই আলো-পাথর ‘ইয়োপার’ নামে পরিচিত হলেও অংশুমান এই পাথরের ‘টেকনিক্যাল টার্ম’ সাইনাইট (syenite) রক, যা ফ্লুরোসেন্ট সোডালাইট সমৃদ্ধ। সুপিরিয়র লেকের সৈকতে তাদের দেখা মেলে। উপর উপর দেখলে তাকে অন্য নুড়িপাথরের সঙ্গে আলাদা করা যাবে না। তারা আসলে বেলাভূমিতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। বেগুনী বর্ণের আল্ট্রাভায়োলেট (ইউ ভি) আলো সেই উপলখণ্ডের ওপর পড়লে পলকে উদ্ভাসিত হয় এবং দীর্ঘক্ষণ সেটি অগ্নিবর্ণ আলো ধরে রাখে।

স্ফুরজ্যোতির্ময় বা প্রতিপ্রভ (ফ্লুরোসেন্ট) এই নুড়ি পাথর অন্বেষণী ভ্রমণ এখন মিশিগানে বেশ জনপ্রিয়। যা দেখেশুনে আপনার রবি ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের ‘পরশ-পাথর’ কবিতার পঙ্‌ক্তি মনে পড়বে। ‘খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।’ অনলাইনেও কিনতে পাওয়া যায় বহুমূল্য এই দ্যুতিময় শিলা, যা বিলাসী মানুষের প্রাসাদ আলো করে থাকে। তাই সাগরপারের আঁধারে মুহুর্মুহু বেগুনী আলোর ঝলকানি। সাগরবেলায় ঝিনুক নয়, খ্যাপা খুঁজে ফেরে আলোক-পাথর!

চিত্র : গুগল
4 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »