Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

অপ্রকাশিত: তীর্থঙ্কর মৈত্রের কবিতা 

হলুদ পাতার ফাঁকে

সব স্মৃতি সুখ আনে, সব গান আকাশে মিলায়!
হলুদ পাতার ফাঁকে, তোমার প্রেমিক খুঁজে যায়
আহত ঘুড়ির স্বপ্ন— অঘ্রাণের বিকেলবেলায়!
তবুও মাটির পথে গোরু নিয়ে রাখাল বালক
তোমাকে বাঁশিতে ডাকে, পাকা ধানে রাতে চন্দ্রালোক
খেতের সোনায় বসে, রূপকথা শৈশব চায়!
পরাজিত রাজা শেষে ফুল গুঁজে রানির খোঁপায়
চোখ চোখ রেখে বলে— ভালবাসি কেবল তোমায়!
প্রেমের নতুন দিন এল নাকি— আলো যে ছড়ায়—
[২৭/১১/২০১৮]

ভোরবেলার মতন

অধিকাংশ ফুল দেখো ফুটে থাকে ভোরবেলা;
স্নিগ্ধ, নরম আলোয়; ঘাসের সবুজ ডগা
কচি কচি মুখে ধরে শিশিরেতে আলো,
এসব বোঝেনি সে তো, তপ্ত রোদ ভালবেসে,
গোরুর গাড়ির মতো চলে গেছে তবু দূরে—
মাটির পথের বুকে চাকার দাগের রেখা
এখনো রয়েছে জেগে— পথ নির্বিকার!
সবুজ লতার ঝোপে, ছায়ার আশ্রয় থেকে
উড়ে গেলে রোদে পাখি; ঝোপ তেমনি তো থাকে;
আবার আশ্রয় নেয় রোদে ক্লান্ত অন্য কোনো
পাখি! এমন নিয়ম। ব্যথা তো পাই না আর;
হৃদয় এখন যেন ভোরবেলার মতন আমার—
[২৪/৯/২০২০]

পায়ে নিয়ে রেণু

প্রতিশোধস্পৃহা দেখো, অধিকাংশ ফুলের থাকে না;
পতঙ্গ শরীরে বসে, মধু খায়— কিছু তো বলে না!
তাই তারা আসে, বসে, চলে যায় অন্য কোনো ফুলে—
অম্লান হাসিতে তবু পবিত্র হৃদয় নিয়ে ফুল;
ভোর-রোদে ফুটে ডালে ছড়ায় সে এ-ই অনুভব—
তুমি তো পতঙ্গ এক, ফুলের হৃদয়, মন, পাঠহীন;
চলে যায় দিন শুধু— মৌন এ ভাষা তার কখনো বোঝে না!
অবুঝ হৃদয়ে ফেরো, পায়ে নিয়ে রেণু কণা কণা!
[৭/১০/২০২০]

তুমি ভেবে দেখো

পাশের বাড়িতে এক সবুজ রঙের টিয়া
খাঁচার ভেতরে থাকে, ছোলা খায়, তবু সে তো
সারাদিন ছটফট… পেয়ারার ডালে বাঁধা
ঝুলন্ত খাঁচাটি দোলে, উপরে পাতার ফাঁকে
নীলাকাশ বসন্তের— শান্ত স্থির— খাঁচা-ছায়া
নিচে দোলে, ছায়া-পাখি তার মধ্যে করে ছটফট!
লাল মোরগের দল আসল পাখিটির ফেলা
ছোলা খুঁটে খায় দেখি— ছোলার ছায়া তো তারা
খায় না কখনো খুঁটে, এ-ই কথা তুমি ভেবে দেখো;
কোনো এক বসন্তের চাঁদওঠা রাতে— বসে ঘরে।
[১/৩/২০২১]

চিত্রণ: মনিকা সাহা

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গা মাঈ কী! জয়!

ঢাকা বা সমগ্র বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোর চাঁদা আদায়ের চল খুব একটা নেই। মণ্ডপে এসেই পাড়ার লোক চাঁদা দেন। জবরদস্তি করে চাঁদা আদায়ের যে বীভৎসতা কলকাতা তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আছে, তা অন্তত ঢাকা আর বরিশালে দেখিনি। পুজোর দিনেও অনেকে এসে প্যান্ডেলের পাশে চাঁদা আদায়কারীদের টেবিলের সামনে এসে চাঁদা দিয়ে যান। পাড়ার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে। স্বেচ্ছায় এসে চাঁদা দিয়ে যান। এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও প্রসঙ্গত

সমসময় তাঁকে চেনেনি। বরং সর্বপ্রযত্নে বানচাল করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে তাঁর প্রগতিশীল কাজকর্মকে। এই সময় ও বাঙালি সমাজ-ও কি চিনেছে তাঁকে? তাঁকে তাই শেষ জীবন কাটাতে হল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী থেকে দূরে সাঁওতাল পরগনায়। শেষ বয়সে উপলব্ধি করেছিলেন তিনি, যাদের জন্য তাঁর এই কাজ, সব অপাত্রে দান!

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: দেড়শো বছরের সূচনায়

তাঁকে অনুবাদ করা হয় ভারতীয় নানা ভাষায় নানা সময়ে। তবুও কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ মূল্যায়িত হননি আজ-ও। বেশ কিছু অনুবাদ ছিল তাঁর, প্রথমজীবনে কলকাতা বাসকালে, হিন্দি থেকে ইংরেজিতে, যা হারিয়ে গেছে চিরতরে। বারো বছর রেঙ্গুন-পেরু পর্বে আগুন লেগে পুড়েছে তাঁর আঁকা ছবি, ‘চরিত্রহীন’-এর পাণ্ডুলিপি, পরে আবার যা লেখেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

শতবর্ষে মহানায়ক উত্তমকুমার

‘মহা’ শব্দটি মহান আর বিশাল, এই দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন ‘মহাকাব্য’ বা ‘মহারাজ’। কাব্য আর রাজার চেয়ে তার মাত্রা ভিন্ন, মহিমা অনেক বেশি তাৎপর্যময়। উত্তম বাংলা চলচ্চিত্রের সেই তাৎপর্যময়তার একমাত্র উদাহরণ। যাঁকে শ্রদ্ধাভরে আমরা ‘কিংবদন্তি’-ও বলে থাকি। তাই সত্যজিৎ রায়ের মতো আরেক কিংবদন্তি তাঁকে নিয়ে চিত্রনাট্য লেখেন, ছবি বানান, আর সে ছবির ‘নায়ক’ হন উত্তমকুমার।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কাজী নজরুল: ত্রস্ত ছায়াপথ

আমরা যদি তাঁর লেখা পড়ে তাঁকে অনুসরণ না করি, তাহলে বৃথাই তাঁকে স্মরণ। যেকোনও প্রতিভা আমাদের মানুষ হিসেবে আদর্শিক হয়ে উঠতে পারে তখনি, যখন আমরা তাঁর মানসিকতাকে অনুভব করে অন্তত চেষ্টা করব তাঁর পথকে ভালবাসতে। একদিকে পাঠ নিচ্ছি ‘এই হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির কাবা নাই’ আর আচরণে ভিন্ন থাকছি, এ হল তাঁকে প্রকৃত অসম্মান। তাহলে তাঁর পাঠ না-ই বা নিলাম!

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সুকান্ত ভট্টাচার্য: ভিসুভিয়স-ফুজিয়ামার সহোদর এক কবি

‘–ক্ষুদ্র এ শরীরে গোপনে মর্মরধ্বনি বাজে’, সুকান্ত লিখেছেন নিজের সম্পর্কে। বলেছেন, ‘আমি এক অঙ্কুরিত বীজ’। এই বীজ মহীরুহে পরিণত হতে পারল না, বাংলা সাহিত্যের পরম দুর্ভাগ্য এটা। কিন্তু তাঁর একুশ বছরের জীবনে তিনি আভাস দিয়ে গেছেন, তাঁর সম্ভাবনা কতদূর প্রসারিত হতে পারত। সুকান্ত মানে একজন কবিমাত্র নন, তার চেয়েও আরও অধিক কিছু।

Read More »