হলুদ পাতার ফাঁকে
সব স্মৃতি সুখ আনে, সব গান আকাশে মিলায়!
হলুদ পাতার ফাঁকে, তোমার প্রেমিক খুঁজে যায়
আহত ঘুড়ির স্বপ্ন— অঘ্রাণের বিকেলবেলায়!
তবুও মাটির পথে গোরু নিয়ে রাখাল বালক
তোমাকে বাঁশিতে ডাকে, পাকা ধানে রাতে চন্দ্রালোক
খেতের সোনায় বসে, রূপকথা শৈশব চায়!
পরাজিত রাজা শেষে ফুল গুঁজে রানির খোঁপায়
চোখ চোখ রেখে বলে— ভালবাসি কেবল তোমায়!
প্রেমের নতুন দিন এল নাকি— আলো যে ছড়ায়—
[২৭/১১/২০১৮]
ভোরবেলার মতন
অধিকাংশ ফুল দেখো ফুটে থাকে ভোরবেলা;
স্নিগ্ধ, নরম আলোয়; ঘাসের সবুজ ডগা
কচি কচি মুখে ধরে শিশিরেতে আলো,
এসব বোঝেনি সে তো, তপ্ত রোদ ভালবেসে,
গোরুর গাড়ির মতো চলে গেছে তবু দূরে—
মাটির পথের বুকে চাকার দাগের রেখা
এখনো রয়েছে জেগে— পথ নির্বিকার!
সবুজ লতার ঝোপে, ছায়ার আশ্রয় থেকে
উড়ে গেলে রোদে পাখি; ঝোপ তেমনি তো থাকে;
আবার আশ্রয় নেয় রোদে ক্লান্ত অন্য কোনো
পাখি! এমন নিয়ম। ব্যথা তো পাই না আর;
হৃদয় এখন যেন ভোরবেলার মতন আমার—
[২৪/৯/২০২০]
পায়ে নিয়ে রেণু
প্রতিশোধস্পৃহা দেখো, অধিকাংশ ফুলের থাকে না;
পতঙ্গ শরীরে বসে, মধু খায়— কিছু তো বলে না!
তাই তারা আসে, বসে, চলে যায় অন্য কোনো ফুলে—
অম্লান হাসিতে তবু পবিত্র হৃদয় নিয়ে ফুল;
ভোর-রোদে ফুটে ডালে ছড়ায় সে এ-ই অনুভব—
তুমি তো পতঙ্গ এক, ফুলের হৃদয়, মন, পাঠহীন;
চলে যায় দিন শুধু— মৌন এ ভাষা তার কখনো বোঝে না!
অবুঝ হৃদয়ে ফেরো, পায়ে নিয়ে রেণু কণা কণা!
[৭/১০/২০২০]
তুমি ভেবে দেখো
পাশের বাড়িতে এক সবুজ রঙের টিয়া
খাঁচার ভেতরে থাকে, ছোলা খায়, তবু সে তো
সারাদিন ছটফট… পেয়ারার ডালে বাঁধা
ঝুলন্ত খাঁচাটি দোলে, উপরে পাতার ফাঁকে
নীলাকাশ বসন্তের— শান্ত স্থির— খাঁচা-ছায়া
নিচে দোলে, ছায়া-পাখি তার মধ্যে করে ছটফট!
লাল মোরগের দল আসল পাখিটির ফেলা
ছোলা খুঁটে খায় দেখি— ছোলার ছায়া তো তারা
খায় না কখনো খুঁটে, এ-ই কথা তুমি ভেবে দেখো;
কোনো এক বসন্তের চাঁদওঠা রাতে— বসে ঘরে।
[১/৩/২০২১]
চিত্রণ: মনিকা সাহা