Site icon BhaloBhasa

মৈনাক দাসের কয়েকটি কবিতা

ইতিহাসের ইস্তেহার

কনকনে বিষন্ন-সিরিঞ্জ দেখে
            ফুলের মাংস মিনমিনে।

মুগ্ধতার গাছে ফুটেছে বিপদফুল

জোনাকির তারুণ্য আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে

গা থেকে সরে যাচ্ছে বর্ণের পরিচয়

পাখি ওড়ার বদলে অভিমান-লাইন ধরে
এসে থেমেছে উপগ্রহের মেট্রোরেল;

কান্নার ঝাঁঝ শুনে মশলার থার্মোমিটারে বেড়েছে পারদ!

বিনোদনের ঠোঙায় ভর্তি নীল লজেন্স

এখন স্মৃতিহীনা অন্ধ অপেক্ষা করছে চুমুর
                            মাংসাশী ফুলের নয়—
.                                          নিকোটিনের।

ত্রুটি

তোমাকে ‘শেষ মানুষ’ বানাব বলে
          নতুন কিছু শিলান্যাস করেছি, ভেঙে ফেলছি
স্তম্ভ, উড়িয়ে দিয়েছি সিলেবাস…

তুমি নিজেকেই বোঝো না!

ধারক-বাহক অথরিটি সেজে
       ফেলছ পা, নিচ্ছ শ্বাস।

রক্তের প্রাপ্তি

আমার জন্মটা কর্দমাক্ত

কেউ তুলে নিয়ে এসে মানুষ করবার
অছিলায় দুমড়েমুচড়ে ভেঙে দিয়েছে নিজস্বতা।

এখনো রক্তঋণ আছে কাদায় আলতারূপে…

কুয়াশায় বসে আবছা গাছের আড়ালে খুঁজি মর্ম।

খোঁচা দিয়ে যায় দু’বেলা অন্নের অগোচরে…

জানা নেই, কবে খুঁজে পাব
রক্তের প্রাপ্তি!

মরীচিকা

তুমি আসবে আসবে করে প্রায় তিরিশ
হাজার বছর বৃন্দাবনী গেয়ে যাচ্ছে
নিরবধি;

সূর্যের আলো সানগ্লাসে বড্ড লাল

তুমি দিনেও ‘তারা’ দেখো কিন্তু আমার চোখ
অপঘাতের অমাবস্যা!

বিশ্রাম নাও, তুমিও ক্লান্ত আর মরীচিকাও

এখনও দেখি!

ডেলিভার্ড হয় কিন্তু রিড হয় না।

চোখের আড়াল

আমি ভুল করেছি!
     জানলা দিয়ে গণতন্ত্র আহ্বানে কখন যে রাজতন্ত্র
.                  মাথাচাড়া দিল, তা আমি বুঝিনি;

বিনামূল্যে ‘প্রাপ্য প্রসাদ’ বিলি করছে তাঁবেদারের দল

এসবের মধ্যে একটু রোদ্দুর এসে দেখাতে চেয়েছিল
গণতন্ত্রের পূর্ণিমা, মুক্তির যুক্তি ও অহিংস মুভমেন্ট।

ধীরে ধীরে আবার উঠবে রোদ্দুর; সামান্য মেঘ কি কখনও আটকাতে পারে?

ভুল তো আমাদের, নয়তো মন্ত্রের!

যার ফাঁকেই এসেছিল রাজতন্ত্র

আবার নতুন সূর্য রোদ্দুর দিক, আলোকিত হোক অন্ধকার।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়